কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জেলা যুবদল নেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের বিরুদ্ধে এক মাসের জন্য একটি ট্রাক্টর ভাড়ায় নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন মো. মজিবুর রহমান নজরুল নামে প্রতিবন্ধী এক ব্যবসায়ী।
নজরুলের অভিযোগ ছিলো, গত তিন বছর যাবৎ ভাড়া এবং ট্রাক্টর কোনটিই ফেরৎ না দিয়ে নিজের কাছে আটকে রেখেছেন যুবদল নেতা বুলবুল। এমনকি ট্রাক্টরটি ফেরৎ চাওয়ায় প্রতিবন্ধী ওই ব্যবসায়ী নজরুলকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
মজিবুর রহমান নজরুলের এসব অভিযোগ মিথ্যা ও কাল্পনিক দাবি করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন যুবদল নেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল। তার দাবি, মজিবুর রহমান নজরুলের কাছে বুলবুল ১৭ লাখ টাকা পান। বুলবুলের এই পাওনা টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা হিসেবে নজরুল তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগের মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
নূরুল ইসলাম বুলবুলের অভিযোগ, মূলত আমার পাওনা টাকা আত্মসাৎ করাসহ আমার দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে এবং সামাজিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে বুলবুল ট্রাক্টর আত্মসাতের মিথ্যা, কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গৌরাঙ্গবাজারে একটি নিউজ পোর্টাল কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেছেন নূরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডিপাশা গ্রামের মরহুম ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
এর আগের দিন বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে একই জায়গায় সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিবন্ধী ব্যবসায়ী মো. মজিবুর রহমান নজরুল। তিনি পাকুন্দিয়া পৌর বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সৈয়দ্গাঁও গ্রামের মরহুম হাজী শাফি উদ্দিনের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মজিবুর রহমান নজরুল এক সময় আমার ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। দুজনের মধ্যে ব্যবসায়িক কারণে বিরোধ সৃষ্টি হলে হিসাবনিকাশ করে নজরুলের কাছে আমার ১৭ লাখ টাকা পাওনা হয়। এই টাকা আদায় নিয়ে পাকুন্দিয়া বাজার বনিক সমিতিতে একাধিকবার দরবার হয়। এতে নজরুল টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও অদ্যাবধি পরিশোধ করেননি।
বুলবুল বলেন, আমার নামে লাল রঙয়েরেএকটি সরাজ ট্রাক্টর কিস্তিতে ক্রয় করি। কিস্তির টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা এবং গাড়ির সমস্ত কাগজপত্রও আমার নামে।
ট্রাক্টরটি নজরুল তাঁর ইটখোলায় ব্যবহার করার জন্য ভাড়া নেন। ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয়ায় আলোচনা সাপেক্ষে দুই বছর আগে গাড়িটি ফেরত নিয়ে আসি। কথা ছিলো ১ বছরের মধ্যে আমার পাওনা টাকা পরিশোধ করবে। কিন্তু আজও সে আমার টাকা পরিশোধ করেনি।
মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা বুলবুল বলেন, নজরুলের বাড়ি পৌর শহরে আর আমার ইউনিয়নে। আমি ইউনিয়ন থেকে শহরে আসি। আমি কখনোই তাকে এসব বলিনি। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। টাকা আত্মসাৎ করতেই এসব পরিকল্পনা করে নজরুল।
বুলবুল কান্না করে বলেন, ১৭ লাখ টাকা আত্মসাতের জন্য নজরুল সংবাদ সম্মেলন করে। আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে বিচার প্রার্থী ও ১৭ লাখ টাকা পরিশোধের জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সংবাদ সম্মেলন করায় নজরুলের বিরুদ্ধে আমি আইনি পদক্ষেপ নিব।