কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


কিশোরগঞ্জে করোনার রুদ্রমূর্তি, জেলায় শনাক্ত ৩০, সদরেই ২৮, মৃত্যু ১

 কিশোরগঞ্জ নিউজ রিপোর্ট | ১৮ জুন ২০২১, শুক্রবার, ১০:১৩ | বিশেষ সংবাদ 


কিশোরগঞ্জে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ। জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ শুক্রবার (১৮ জুন) রাতে প্রকাশিত রিপোর্টেও সংক্রমণের উর্ধ্বগতির ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। করোনার রুদ্রমূর্তিতে বেড়েছে সংক্রমণের হার।

সর্বশেষ রিপোর্টে জেলায় মোট ৩০ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর বিপরীতে করোনাভাইরাস মুক্ত হয়ে জেলায় এদিন সুস্থ হয়েছেন মোট ১০ জন।

এছাড়া কোভিড-১৯ পজেটিভ একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি করিমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা একজন নারী (৩০)।

কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (১৮ জুন) বেলা ১টায় তার মৃত্যু হয়।

এ পরিস্থিতিতে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বর্তমান রোগীর সংখ্যা ১৯ জন বেড়েছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) জেলায় বর্তমান আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল ২৭৩ জন। ফলে শুক্রবার (১৮ জুন) বর্তমান রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে মোট ২৯২ জন।

জেলায় নতুন করোনা শনাক্ত হওয়া মোট ৩০ জনের মধ্যে ২৮ জনই কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলাতে শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া বাকি ২ জনের মধ্যে করিমগঞ্জ উপজেলায় ১ জন এবং ভৈরব উপজেলায় ১ জন শনাক্ত হয়েছে।

ফলে শনাক্ত, সুস্থ ও মৃত্যু সব সূচকেই জেলার মধ্যে শীর্ষে থাকা কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় বর্তমান মোট রোগী ২৯২ জনের মধ্যে ২২৩ জনই কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায়।

তিন উপজেলা বর্তমানে করোনাশূন্য থাকায় বাকি ৯ উপজেলা মিলিয়ে বর্তমান রোগীর সংখ্যা ৬৯ জন।

কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে হাসপাতালটির প্রি-আইসোলেশনে ভর্তিকৃত জরুরী রোগীসহ বুধবার (১৬ জুন) ও বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সংগৃহীত মোট ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৭ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।

এ রিপোর্টে মোট ২০৭ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া হয়েছে।

বাকি ১১৩ জনের মধ্যে ৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে। সেখানে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) এই ৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সবারই কোভিড-১৯ নেগেটিভ এসেছে।

এছাড়া কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এবং ভৈরব, কুলিয়ারচর ও ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ৪৪ জনের রেপিড এন্টিজেন টেস্টে ৩ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।

নতুন সুস্থ হওয়া ১০ জনের মধ্যে ৭ জন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার। এছাড়া বাকি ৩ জন কটিয়াদী উপজেলার।

কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে বর্তমানে আক্রান্ত ও সন্দেহজনক মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৭ জন যাদের মধ্যে ৮ জন আইসিইউতে রয়েছেন।

গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ৯ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।

এই সময় পর্যন্ত জেলায় মোট ৫১৯৩ জন শনাক্ত, ৪৮১৫ জন সুস্থ এবং ৮৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

বর্তমানে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ২৯২ জন। তাদের মধ্যে ২১ জন হাসপাতাল ও ২৭১ জন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।

শনাক্ত, সুস্থ ও মৃত্যু সব সূচকেই জেলার মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা শীর্ষে রয়েছে।

জেলার ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম এ তিন হাওর উপজেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্ত কোন রোগী নেই।

বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মোট ২৯২ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ২২৩ জন, হোসেনপুর উপজেলায় ৪ জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ৫ জন, তাড়াইল উপজেলায় ৯ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১৫ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ১০ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ১২ জন, ভৈরব উপজেলায় ১১ জন, নিকলী উপজেলায় ১ জন এবং বাজিতপুর উপজেলায় ২ জন রয়েছেন।

এদিকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৭৬ হাজার ৬৬৫ জন প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। এরপর থেকে প্রথম ডোজ দেয়া আপাতত বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে গত ৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫৯ হাজার ২১ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন।

শুক্রবার (১৮ জুন) সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান এসব তথ্য কিশোরগঞ্জ নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর