কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


ভৈরবে পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও ভর্তি হতে পারছে না ২৭৫ শিক্ষার্থী, বিক্ষোভ মানববন্ধন

 আফসার হোসেন তূর্জা, ভৈরব | ১০ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ১২:৫০ | ভৈরব 


কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সরকারি কে.বি পাইলট মডেল হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া ৪৫৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৭৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছে না। সরকারি নিয়মে ১৮০ জনকে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে।

এমন সিদ্ধান্তে হতাশ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ। তারা এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) ভৈরব পৌর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

মিছিল শেষে তারা একটি লিখিত দাবি নিয়ে ভৈরব পৌর মেয়র আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বেনু বরাবর জমা দেন। পরে আবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট গেলে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিলটি।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রথম শ্রেণি থেকে অদ্য পর্যন্ত লেখাপড়া করে পাশ করে আসছি। কিন্তু অষ্টম শ্রেণিতে পাশ করার পর যখন নবম শ্রেণিতে উঠবো, তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়ে দিয়েছে, আমাদের থেকে ১৮০ জন নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে।

আমরা ৪৫৫ জন পাশ করেছি, মাত্র ২ জন অকৃতকার্য হয়েছে। এখন ১৮০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলে আমরা বাকি শিক্ষার্থীরা কোথায় যাব? আমরা কি বানের জলে ভেসে যাব? আমাদের সাথে কি এটা অন্যায় হচ্ছে না?

এ সময় শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, মানবিক, ব্যবসায়িক ও বিজ্ঞান শাখায় ৬০ জন করে শিক্ষার্থী নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এমনও তো হতে পারে আমরা বিজ্ঞান শাখায় না পড়ে মানবিক শাখায় পড়বো। কিন্তু ৬০ জন নিয়ম করে আমাদের উপর শাখা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

আমরা চাই ১৮০ জন নয়, আমাদের সবাইকে বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দেয়া হোক। আমরা এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসহ সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীরা এক পর্যায়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দেন এবং তিনি বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক ক্লাসে ৬০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী পড়তে পারবে। আমরা চাইলেও এর বেশি সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী প্রতি ক্লাসে রাখতে পারব না। এটি সরকারি নিয়ম এই নিয়ম আমাদের মানতে হবে এর বাইরে আমরা কিছু করতে পারব না।

এছাড়া তিনি বলেন, যে সকল গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও এই স্কুলে পড়ার চান্স পায় নাই এবং টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারবে না তারা যদি আমার সাথে যোগাযোগ করে তাহলে আমি তাদের অন্য স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থাসহ পড়ালেখার খরচ বহন করব।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। সরকারি নিয়মে শিক্ষার্থী ভর্তি হলে কারো কিছু করার থাকে না। যেহেতু স্কুলটি সরকারি হয়েছে। সে জন্য নিয়ম মানার কোন বিকল্প নেই। তারপরও আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে বিদায় করেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ১৮০ জন শিক্ষার্থীদের ৬০ জন করে ৩ বিভাগে ভর্তি করবো। তবে ৪৫৫ জন শিক্ষার্থী পাশ করলেও আমরা মেধা তালিকায় ১৮০ জন শিক্ষার্থী স্কুলে ভর্তি করবো। আমরা সরকারি নির্দেশনার বাইরে কোন কিছু করতে পারবো না।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর